স্টাফ রিপোর্টার::
পাগনার হাওর বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি হাওর, যা বর্ষাকালে উত্তাল ঢেউ এবং করচ বাগানের জন্য পরিচিত।
এই হাওরের ফেনারবাঁক ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের বসবাস। এই ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ কৃষি ও মৎস্যজীবী। দারিদ্রসীমার নিচে তাঁদের বসবাস। আর্থিক সংকটের কারণে অনেক পরিবারের ছেলেমেয়ে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষগুলোর সন্তানদের জন্য গ্রামে নেই প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা। হাওরের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন নাজুক পরিস্থিতি নজরে আসলে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শিশুদের জন্য স্কুল করার ঘোষণা দিয়েছেন।
একই সঙ্গে স্কুলের শিশু-শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে শিক্ষা উপকরণসহ নানা সেবা প্রদানের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন।
জানাযায়, বর্ষা এলেই পানিতে ডুবে যায় জামালগঞ্জের পাগনার বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চল। তখন চোখে পড়ে সেই জলরাশি, যা স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা যেমন বদলে দেয়, তেমিনী দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষগুলোর জীবন জীবিকা নেমে আসে অন্ধকারে। গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এখানকার শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। আর যারা পড়াশোনা করে তারা পাশের গ্রামে গিয়ে স্কুলে ভর্তি হতে হয়। কেউ বা পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়র বাড়িতে থেকে করতে হয় পড়াশোনা। তবে বর্ষার সময় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে। ফলে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলে পৌঁছানো হয়ে উঠে একরকম জীবনের ঝুঁকি নেওয়ার শামিল। বর্ষার ছয় মাসে শিক্ষার্থীদের অনেকেই বিদ্যালয়ে যেতে পারেনা। প্রাথমিক শিক্ষায় এমন প্রতিকূল অবস্থার জন্য রসুলপুর গ্রামে নিজ অর্থায়নে স্কুল নির্মাণ করবেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ও সুনামগঞ্জ ১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহবুবুর রহমান।
লালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোশাররফ বলেন, আমি বর্ষায় স্কুলে যেতে পারি না। আমরার গ্রামে স্কুল হলে লেখাপড়া ভালো করে করতাম। মাহবুব চাচ্চু বলছেন স্কুল দিবেন। এতে আমার খুশি লাগছে।
রসুলপুর গ্রামের সৈয়দুর রহমান বলেন, আমাদের এতোদিন শুধু আশ্বাস দিয়ে গেছেন নেতারা,কেউ কথা রাখেনি। মাহবুব ভাই আমরার গ্রামে এসে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা কইয়া স্কুল ঘর করে দেওয়ার ঘোষণা দেইন। যত টাকা লাগে পানি কমার সাথে সাথে স্কুল ঘর করে দিবেন। আমরা তাইনের জন্য দোয়া করি, আমরা গ্রামবাসী খুব খুশি হইছি।
জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলায় ২০ টিরও বেশি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই, তাঁর মধ্যে রসুলপুর গ্রাম অন্যতম। শিক্ষা বঞ্চিত হাওর বেষ্টিত এই গ্রামে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমানের নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ হবে এটি আনন্দের খবর। রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে এরকম সুদৃষ্টি থাকলে পিছিয়ে পড়া জনপদ এগিয়ে যাবে।
মাহবুবুর রহমান সুনামকন্ঠকে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার প্রচার ও নির্বাচনী গণসংযোগে রসুলপুর যাওয়ার পর শুনি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। ছোট বাচ্চারা মিছিল দিচ্ছে আমাদের দাবি, স্কুল স্কুল। ভবিষ্যত বাংলাদেশ যারা গড়বে, তাদেরকে তাৎক্ষণিক কথা দিলাম নতুন বছরে তোমাদের বিদ্যালয়ে তোমরা পড়বা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের শিক্ষার হার বাড়াতে হবে। কিন্তু জামালগঞ্জের পাগনার বিস্তীর্ণ হাওরের রসুলপুর গ্রামের শিশুদের নেই প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা। সে কারণে শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। হাওরাঞ্চলে প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা একেবারেই বেহাল। নতুন বাংলাদেশে শিশুদের শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ার সুযোগ নেই। হাওড়ের পানি শুকিয়ে গেলেই রসুলপুর গ্রামে স্কুলের নির্মাণ কাজ শুরু করবো। নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে এই গ্রামের শিশুরা স্কুলে ভর্তি হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। আরও যে সমস্ত গ্রামে স্কুল নেই, সেই সব গ্রামগুলোতে দ্রুত কিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।
জামালগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পীযুষ কান্তি মজুমদার বলেন, রসুলপুর গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় শিশুরা শিক্ষা বঞ্চিত । এই গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে স্কুল নির্মাণ করে দিলে শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমি এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। পরবর্তীতে সরকারি ভবন আসলে নিয়ম অনুযায়ী তা বাস্তবায়ন করা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
হাওড়ের অবহেলিত গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ এমপি প্রার্থী মাহবুবুর রহমানের
- আপলোড সময় : ০৫-১০-২০২৫ ১০:৪১:২০ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৫-১০-২০২৫ ১০:৪৩:২৫ অপরাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ